ইসরায়েলের বর্বরোচিত আগ্রাসনের প্রতিবাদে নিকলীতে ছাত্র-জনতার গর্জন, বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল জনপদ

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা আজ গর্জে উঠেছে ইসরায়েলের নির্মম আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। ৭ এপ্রিল, রবিবার, বাদ যোহর শুরু হয় এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল। এতে অংশ নেয় হাজারো ছাত্র-জনতা, স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচি মুহূর্তেই জনস্রোতে পরিণত হয়।

বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয় নিকলী উপজেলার ঐতিহাসিক ঈদগাহ মাঠ থেকে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, মিছিল শুরুর আগেই ঈদগাহ মাঠে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। নিকলী সদরের বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল ঈদগাহ মাঠে এসে একত্রিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি এক বিশাল জনসমাগমে রূপ নেয়।

মিছিলটি নিকলী ঈদগাহ মাঠ থেকে শুরু হয়ে সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। স্লোগানে মুখরিত ছিল গোটা এলাকা—“ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করো”, “ফিলিস্তিনের শিশুরা হত্যার শিকার কেন?”, “ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করো”—এই ধরনের শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় বাতাস।

প্রতিবাদী জনতার কণ্ঠে ছিল রাগ, ক্ষোভ ও মানবিক সহানুভূতির ঝরনা। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে প্রতিদিন। ফিলিস্তিনে শিশু, নারী ও নিরীহ মানুষদের ওপর হামলা যেন এক অমানবিক ট্র্যাজেডি। এই পরিস্থিতিতে নিরব থাকা মানে অন্যায়ের সহযোগিতা করা।

বিক্ষোভ মিছিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কিছু ইসলামী চিন্তাবিদ ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেন, ইসরায়েল যে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তা মানবতা বিরোধী অপরাধ। বিশ্বের সকল মুসলমানদের উচিত এই বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া।

এক বক্তা বলেন, “আমরা শুধু প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ থাকব না, বরং ইসরায়েলের তৈরি যেকোনো পণ্য বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি মুসলিম যেন সচেতন হয় এবং দখলদার রাষ্ট্রের অর্থনীতি ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখে।”

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ইসরায়েলি পণ্যের তালিকা হাতে রেখে সচেতনতা তৈরি করছিলেন। পণ্যবর্জনের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার অনুরোধও জানানো হয়, যাতে বিশ্বব্যাপী এই গণহত্যার বিরুদ্ধে আরও জোরালো আওয়াজ ওঠে।

এই বিক্ষোভ মিছিল প্রমাণ করেছে, সাধারণ জনগণ মানবতা এবং ন্যায়ের পক্ষে কখনো নিরব থাকে না। নিকলী উপজেলার এই প্রতিবাদ শুধু একটি অঞ্চল নয়, বরং গোটা দেশের সচেতনতার প্রতিচ্ছবি।

এদিকে, মিছিলে কোনও ধরণের বিশৃঙ্খলা না ঘটায় স্থানীয় প্রশাসনও স্বস্তি প্রকাশ করেছে। মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এবং আয়োজকগণ আগামীতেও এই ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post