কিশোরগঞ্জে মাদকবিরোধী জনসচেতনতামূলক সমাবেশ: যুবসমাজ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ আহ্বান

"মাদককে না বলি, বাঁচাই জীবন, রক্ষা করি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম" — এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া বটতলায় অনুষ্ঠিত হলো এক সচেতনতামূলক মাদকবিরোধী সমাবেশ। শনিবার বিকেলে আয়োজিত এই সমাবেশে স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজে দিন দিন বেড়ে চলা মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদক নির্মূলে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন মিলন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ।

প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীন। তিনি বলেন, “মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকে ধ্বংস করে না, একটি পরিবার, সমাজ এবং দেশকে ক্রমশ অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয়। এর বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য শেখ মাসউদ ইকবাল, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বিল্লাল হোসেন এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মমিন মিয়া।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতা প্রভাষক মো. আবু হানিফ, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় যুব সংগঠন 'ভোরের সূর্য'-এর সভাপতি মো. সেলিম মিয়া সহ অন্যান্য যুবনেতারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মাদকের প্রসার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রশাসন ও সাধারণ জনগণ একসঙ্গে কাজ না করলে এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বক্তারা পুলিশ প্রশাসনকে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান এবং মাদক চক্রের গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

তারা আরও বলেন, মাদক ব্যবসার শেকড় উপড়ে ফেলতে হলে প্রতিটি পরিবারকেই সচেতন হতে হবে। বাবা-মাকে সন্তানদের চলাফেরা ও আচরণে নজর রাখতে হবে এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।

এ সময় ওয়ার্ডের কয়েকজন প্রবীণ ও তরুণ নেতা—করিম, ওসমান, মহরম, সোহেল, সজল, জাহিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন এবং একাত্মতা প্রকাশ করেন।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সুমন এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির মোশারেফ হোসেন গোলাপ।

সমাবেশ শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীরা অঙ্গীকার করেন, তারা মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং মাদক নির্মূলে পুলিশের পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন।

এই আয়োজনটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং অনেকেই এটিকে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এ ধরনের আরও আয়োজনের দাবি জানানো হয়েছে, যাতে করে একটি সুস্থ ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post