চলতি বছর নির্বাচন না দিলে, আদায় করে নেয়া হবে : ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে, অন্যথায় জনগণের শক্তিকে সাথে নিয়ে তা আদায় করে নেওয়া হবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অত্যাবশ্যক।

শনিবার (৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টটিতে ইশরাক হোসেন বর্তমান সরকারের ওপর কড়া সমালোচনা করে বলেন, “যদি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন না হয়, তবে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা সে অধিকার আদায় করব ইনশাআল্লাহ।”

ইশরাক আরও উল্লেখ করেন, ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে যারা সরকারপন্থী অবস্থানে রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। তাঁর মতে, নির্বাচনকালীন সময়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হলে, প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সরকারঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতাদের প্রশাসনিক অংশগ্রহণ গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তাই এই শ্রেণির নেতাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত বলে তিনি মত দেন।

বর্তমানে ইশরাক হোসেন রাজনৈতিক সফরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। লন্ডনে অবস্থানকালেই তিনি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত মতামত প্রকাশ করে যাচ্ছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি নেতাদের এ ধরনের হুঁশিয়ারিমূলক বক্তব্য মূলত সরকারকে চাপের মধ্যে রাখার কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দলটি তাদের অবস্থান পুনরায় জোরদার করার পাশাপাশি জনগণের মনোভাবও বুঝে নিতে চাইছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি নতুনভাবে রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হয়েছে। তারা এখন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি সামনে এনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, আগের নির্বাচন বর্জন করায় বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক প্রান্তিকতায় রয়েছে। এবার তারা আগেভাগেই রাজনৈতিক প্রচার, জনসম্পৃক্ততা এবং কূটনৈতিক সফরের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। আর এই প্রচেষ্টারই একটি অংশ হিসেবে ইশরাক হোসেনের এই বক্তব্যকে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করা হলেও, শিগগিরই তারা জনসম্পৃক্ত আন্দোলন এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এই মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি এখন সব পক্ষ থেকেই উঠে আসছে। তবে বাস্তবে তা কীভাবে সম্ভব হবে, তা নির্ভর করছে সরকার ও বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কৌশলের ওপর।

Post a Comment

Previous Post Next Post