কিশোরগঞ্জে হোক চীনের সহায়তায় ১০০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল: সমন্বয়ক ইকরাম হোসেনের জোরালো দাবি

কিশোরগঞ্জে হোক চীনের সহায়তায় ১০০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল: সমন্বয়ক ইকরাম হোসেনের জোরালো দাবি

বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় ও জনবহুল জেলা কিশোরগঞ্জ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সমৃদ্ধ হলেও এই জেলায় এখনো একটি আধুনিক, সুসজ্জিত ও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতালের অভাব রয়েছে। প্রায় ৩২,৬৭,৬৩০—অর্থাৎ ৩৩ লক্ষাধিক মানুষের আবাসভূমি এই জেলায় আজও স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো রয়েছে উপেক্ষিত ও অবহেলিত।

সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থাকলেও সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধার অভাব প্রকট। ফলে সাধারণ রোগ থেকে শুরু করে জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জের মানুষকে যেতে হয় রাজধানী ঢাকায় কিংবা ময়মনসিংহসহ অন্যান্য বড় শহরে। এতে একদিকে যেমন ব্যয় বাড়ে, তেমনি বাড়ে ঝুঁকিও।

এই প্রেক্ষাপটে কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সচেতন নাগরিক ও সমাজকর্মীরা আধুনিক হাসপাতালের দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন। তাদেরই একজন, জেলা সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন সম্প্রতি চীনের সহযোগিতায় প্রস্তাবিত ১০০০ শয্যার হাসপাতালটি কিশোরগঞ্জে স্থাপনের জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন,
“কিশোরগঞ্জের মানুষ উন্নত চিকিৎসা ও সম্মানজনক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা অবহেলিত থেকেছি। এখন সময় এসেছে একটি বৃহৎ ও আধুনিক হাসপাতালের মাধ্যমে এই জেলার স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের।”

ইকরাম হোসেন মনে করেন, চীন সরকারের সহায়তায় প্রস্তাবিত ১০০০ শয্যার এই আধুনিক হাসপাতাল কিশোরগঞ্জে স্থাপিত হলে তা শুধু জেলার জন্য নয়, গোটা ময়মনসিংহ বিভাগের জন্যই একটি স্বাস্থ্যবিপ্লব বয়ে আনবে। এর মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হওয়ায় জনগণের ভোগান্তি কমবে এবং মৃত্যুর হারও হ্রাস পাবে।

তিনি আরও বলেন,
“এখন সময় এসেছে, আমরা সকলে যার যার অবস্থান থেকে এই দাবিকে গণদাবিতে রূপ দিই। সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করি যাতে চীনের সহায়তায় প্রস্তাবিত হাসপাতালটি কিশোরগঞ্জেই স্থাপন করা হয়।”

কিশোরগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, যেখানে সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি বিশেষায়িত বিভাগ, জরুরি সেবা, সার্জারি, শিশু ও মাতৃসেবা, হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ সব ধরনের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। বর্তমান সময়ে এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা যে কতটা তা সাম্প্রতিক নানা পরিস্থিতিতেই স্পষ্ট হয়েছে।

এই দাবির পেছনে রয়েছে জনমানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষা। একজন মা তার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে এসে যখন প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে ফিরে যান—তখন বোঝা যায় উন্নত হাসপাতালের অভাব কতটা বাস্তব। একজন বৃদ্ধ যখন হুইলচেয়ারে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেবা পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন, তখনই সময় চায় পরিবর্তনের।

এই দাবিকে আরও জোরদার করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ যেমন:
#স্বাস্থ্যসেবা_সবার_অধিকার,
#১০০০_শয্যার_হাসপাতাল_কিশোরগঞ্জে,
#চিকিৎসা_অধিকার_হোক_সুনিশ্চিত

এখন সময়, এই দাবিকে দল-মত নির্বিশেষে সমর্থন করার। উন্নত চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সম্মানজনক জীবন যাপনের নিশ্চয়তা শুধু কোনো গোষ্ঠীর নয়, এটি প্রতিটি নাগরিকের অধিকার।

Post a Comment

Previous Post Next Post