কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন সমিতি বাজারে আজ ১১ এপ্রিল, শুক্রবার বিকেল ৫টায় এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সংগ্রামী নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার কবির উদ্দিন আহমেদকে। স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে আয়োজিত এই স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সমাজকর্মী ও সাধারণ জনগণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্ষীয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদ সাইফুল্লাহ ভিপি সোহেল। তিনি তাঁর বক্তব্যে কবির উদ্দিন আহমেদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং কিশোরগঞ্জ জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
ভিপি সোহেল বলেন, "কোম্পানি কমান্ডার কবির উদ্দিন আহমেদ শুধু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তিনি ছিলেন এ অঞ্চলের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রপথিক। তাঁর সাহসিকতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দেশপ্রেম আজও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। আমরা কৃতজ্ঞ এই মহান ব্যক্তির কাছে, যিনি নিজের জীবন বাজি রেখে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন।"
তিনি আরও বলেন, "কবির উদ্দিন আহমেদের সন্তান সাইফুল হক সুমন আজ এলাকার মানুষের কাছে একটি প্রতিষ্ঠিত নাম, একটি ব্র্যান্ড। তাঁর মাঝেও তাঁর বাবার মতো নেতৃত্বগুণ ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা রয়েছে। আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে সুমন সাহেব তার বাবার আদর্শকে ধারণ করে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন।"
স্মরণসভায় বক্তারা আরও স্মরণ করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বিএনপির শীর্ষ নেতা ড. ওসমান ফারুকের অবদান, যিনি রাজনৈতিক জীবনে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করে গেছেন। বক্তারা জানান, কবির উদ্দিন আহমেদ এবং ড. ফারুকের মতো ব্যক্তিদের জীবন থেকে বর্তমান প্রজন্মকে শিক্ষা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাইফুল হক সুমনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাঁরা কবির উদ্দিন আহমেদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে একটি স্মারক প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতে তাঁর নামানুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সড়কের নামকরণের দাবি জানান।
সবশেষে, মরহুম কবির উদ্দিন আহমেদ ও সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এ সময় এলাকার শত শত মানুষ হাত তুলে প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেন। আবেগঘন পরিবেশে সম্পন্ন হওয়া এই মাহফিলে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সবাই একত্রিত হয়ে শ্রদ্ধা জানায় এই মহান ব্যক্তির প্রতি।
এই আয়োজন স্থানীয় মানুষের মধ্যে নতুন করে একতা ও দেশপ্রেমের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। উপস্থিত সকলে প্রতিজ্ঞা করেন—জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতি ধরে রাখতেই হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের আত্মত্যাগের কথা জানাতে হবে।
Post a Comment