বিলবোর্ড দেখাতে গাছের ডাল কর্তন, বিএনপি নেতার দলীয় পদ স্থগিত

সিলেট মহানগরে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে গাছের ডাল কেটে বিলবোর্ড স্থাপন করার ঘটনায় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কড়া সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত নেতা মো. আমির হোসেনের দলীয় সব পদ স্থগিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মহানগর বিএনপির সহসভাপতি এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ। এতে জানানো হয়, গাছের ডাল কেটে ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা বিলবোর্ড স্থাপন করায় দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ড দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী এবং এটি নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ধরনের পরিবেশবিরোধী এবং স্বেচ্ছাচারী কাজের কারণে আমির হোসেন দলের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছেন। বিষয়টি ইতোমধ্যেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগামী তিন মাসের জন্য দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল ধরনের সাংগঠনিক পদ থেকে তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় একটি বড় আকৃতির বিলবোর্ড টানানোর মাধ্যমে। ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাতে বিলবোর্ডটি স্থাপন করেন মো. আমির হোসেন। তবে বিলবোর্ডের সামনে থাকা একটি গাছের ডালপালা চোখে পড়ায়, সেটিকে পরিষ্কার করার নামে সম্পূর্ণ ডাল কেটে ফেলা হয়। এতে করে পরিবেশবাদীদের পাশাপাশি সাধারণ পথচারীদের মধ্যেও ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যক্তিগত প্রচারের স্বার্থে এমন পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

পরিবেশ নিয়ে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রচারণা হোক বা ব্যক্তিগত উদ্যোগ—এ ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় প্রাকৃতিক সম্পদ বা নগরীর পরিবেশকে বিপন্ন করা উচিত নয়। গাছ কাটা সংক্রান্ত নিয়মনীতি লঙ্ঘন করায় আমির হোসেনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়ার দাবি উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি কেউ যদি অবহেলা প্রদর্শন করেন বা দলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত থাকবে।

এই ঘটনায় একদিকে যেমন রাজনৈতিক নেতার দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিতরে শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণের নজিরও তৈরি হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post